নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা - ফারুক মাহফুজ, কি এই নামটা খুবই অজানা তাই না! শ্রোতারা হয়তো তাকে অন্য নামে জানেন। তিনি হলেন কিংবদন্তি গায়ক জেমস। ভক্তদের কাছে গুরু হিসেবে পরিচিত। আজ তিনি ৫৮ পূর্ণ করে ৫৯ তে পা রাখতে চলেছেন দেশের কালজয়ী এই রকস্টার। এপার বাংলা হোক অথবা ওপার বাংলা সর্বকালের অন্যতম শিল্পী হলেন তিনি। যার গান আজও শ্রোতারা ভালোবাসেন।
আজ খ্যাতিমান এই কণ্ঠশিল্পীর জন্মদিন। প্রতিবছরই দিনটি জেমসের শুরু হয় ভক্তদের শুভেচ্ছা, ভালোবাসা এবং উপহার পাওয়ার মধ্য দিয়ে। বরাবরের মতো এবারের জন্মদিনেও নিজ থেকে কোনও আয়োজন করছেন না জেমস। এদিন জেমস জানান, 'বরাবরের মতো এবারও জন্মদিনে কোনও আয়োজন করছি না। তার পরও সবার ভালোবাসা আর শুভেচ্ছায় দিনটি কাটে'।
১৯৬৪ সালের ২ অক্টোবর নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন জেমস। তার বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামেই। জেমসের জীবন বেশ বাঁক বদলের, অনেক গল্পের। তার বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মচারী, যিনি পরে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরিবারের অমতেই সংগীতচর্চা শুরু করেন জেমস। বাবার সঙ্গে গান নিয়ে অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন। সংগীতের নেশায় ঘর ছেড়ে পালিয়ে যান। চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিং নামক একটি বোর্ডিংএ তিনি থাকতে শুরু করেন। সেখানে থেকেই তার সংগীতের ক্যারিয়ার শুরু হয়।
এরপর ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ফিলিংস একটি ব্যান্ড। জেমস নিজেই ব্যান্ডের প্রধান গিটারিস্ট ও ভোকালিস্ট ছিলেন। ১৯৮৭ সালে তার প্রথম অ্যালবাম স্টেশন রোড প্রকাশ পায়। যদিও অ্যালবামটি সে সময়ের শ্রোতাদের গান শোনার রুচির সঙ্গে একটু ভিন্ন মেজাজের হওয়ায় জনপ্রিয়তা পায়নি। পরে ১৯৮৮ সালে অনন্যা নামের অ্যালবাম রিলিজ করে সুপারহিট হয়ে যান জেমস। এরপর ১৯৯০ সালে জেল থেকে বলছি, নগর বাউল, লেইস ফিতা লেইস, কালেকশন অফ ফিলিংস অ্যালবামগুলো ফিলিংস ব্যান্ড থেকে বের হয়। একের পর এক গান গেয়ে বেশ সফলতা এবং নাম অর্জন করেছিলেন তিনি।
তার বেশকিছু গান চলচ্চিত্রে সুপারহিট হয়ে আছে। দেশা দ্য লিডার, সত্তা ছবির জন্য গান করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। বাংলা গানের পাশাপাশি হিন্দি গানে কণ্ঠ দিয়েও জয় করেছেন লাখো ভক্ত-শ্রোতার হৃদয়। বলিউডে তার গাওয়া ভিগি ভিগি, চল চলে এবং আলবিদা, রিস্তে, বেবাসি গানগুলো উল্লেখযোগ্য। একটা প্রজন্মের কাছে জেমস মানে এখনও এক উন্মাদনা, তার প্রতি ভক্তদের ভালোবাসা এতোটাই প্রবল যে ভক্তদের তিনি দুষ্টু ছেলের দল বলে অ্যাখ্যায়িত করেন।