নিজস্ব প্রতিনিধি , ঝাড়গ্রাম - দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যাক্ত ভগ্নপ্রায় অবস্থা ঝাড়গ্রামের মহুলবনি শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের। আর সেই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মধ্যেই দিনের পর দিন বাচ্চাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে ক্লাস। বাচ্চাদের শিক্ষাকেন্দ্রে পাঠাতে রীতিমত ভীত-সন্ত্রস্ত অভিভাবকরা। যখন তখন ঘটে যেতে পারে বড়রকম দুর্ঘটনা। ইতিমধ্যেই আতঙ্কে বহু পড়ুয়া স্কুলে আসা বন্ধও করে দিয়েছেন। বারংবার স্থানীয় প্রশাসনের কাছে জানিয়েও মিলছেনা কোনো সুরাহা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে , ঝাড়গ্রামের সাঁকরাইল ব্লকের ধানঘোরী গ্রামেই অবস্থিত মহুলবনি শিশু শিক্ষাকেন্দ্র। দেখলে মনে হবে কোনো পুরোনো পরিত্যক্ত ভুতুড়ে বাড়ি। অথচ, আসলেই সেটি একটি শিশু শিক্ষাকেন্দ্র। দেয়ালে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত, ফাটল ধরেছে সর্বত্র, দরজা-জানলায় ধরেছে উঁই পোকা। ছাদ ভেঙে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। গ্রামে এই একটিমাত্র শিক্ষাকেন্দ্র থাকায় নিরুপায় হয়ে অভিভাবকরা বাচ্চাদের শিক্ষাকেন্দ্রে পাঠাচ্ছেন। শিক্ষাকেন্দ্রের বেহাল দশার কারণে পড়ুয়ারা থেকে শুরু করে, অভিভাবক, প্রধান শিক্ষিকা সকলেই ভীত। পড়ুয়াদের জন্য নেই সঠিক মিড ডে মিলের ব্যবস্থা।
অভিভাবকরা জানান , স্কুলের যেরকম বেহাল দশা যেকোনো সময় চাঁই খসে, ছাদ ভেঙে পারে। আমরা বাচ্চাদের একা স্কুলে ছাড়তে ভয় পাচ্ছি। বাচ্চাদের সাথে আমরাদেরকেও স্কুলে বসে থাকতে হয়। বাচ্চরাও স্কুলে আসতে ভয় পাচ্ছে। অনেকে তো স্কুলে আসায় বন্ধ করে দিয়েছে। তারপর ঠিক করে মিডডে- মিল পর্যন্তও দেওয়া হয়না।। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে জানানো হলে তিনি বলেন এবার প্রশাসন কোনো ব্যাবস্থা গ্রহণ না করলে গাছ তলায় বসেই ক্লাস করতে হবে। গ্রামে অন্য কোনো স্কুলও নেই। বর্ষাকালে জলও জমে যায়। বাচ্চাদের পড়াশোনার ব্যাপারে আমরা ভীষণ চিন্তিত। ইতিমধ্যেই কোনো ব্যাবস্থা নেওয়ার অনুরোধ প্রশাসনের কাছে।
ধানঘোরি গ্রাম পঞ্চায়েত উপপ্রধান সৌমিত্র মাইতি জানান, "আমার কাছে এই নিয়ে কোনো এখনো পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে ব্যাপারটি নিয়ে ভাববো।" দীর্ঘদিন ধরে স্কুলের বেহাল পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেত্ত কেন এই কথা বলা হচ্ছে ?এইরকম পরিবেশ কী বাচ্চাদের পঠন-পাঠনযোগ্য পরিবেশ হতে পারে? শুধুমাত্র ঝাড়গ্রামের শিক্ষাকেন্দ্রই নয় এইরকম ঘটনা ছড়িয়ে রয়েছে দেশের বিভিন্ন আনাচে-কানাচে। তাদের মধ্যে হয়ত ১০ শতাংশ ঘটনা আমাদের সামনে আসে।