নিজস্ব প্রতিনিধি , বীরভূম - সামনেই পুজো কিন্তু বৃষ্টি কমার নামমাত্র নেই। একের পর এক নিম্নচাপও ঘূর্ণাবর্ত হয়েই চলেছে। গত এক সপ্তাহ টানা বৃষ্টিতে রাজ্য জুড়ে প্লাবিত হয়েছে একাধিক জায়গা। বীরভূমের এলাকার জল বেড়ে প্লাবিত হয়েছে বেশ এলাকা। অন্যদিকে রায়গঞ্জ এলাকাতেও একই পরিস্থিতি।
শনিবার রাত আটটার পর ব্রাহ্মণী নদীর বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের শীতল গ্রাম অঞ্চল। বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জলের নীচে বিঘের পর বিঘে চাষের জমি। বাড়ির মধ্যেও একাধিক জল জমে রয়েছে। কোথাও কোথাও হাঁটু থেকে কোমর সমান জল। কুল পাড়া ও প্রসাদপুর দুই গ্রামের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। দুই গ্রামের মধ্যে থাকা কালভার্টের উপর দিয়ে বইছে জল। উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী।
রাতেই বৈধরা জলাধার থেকে প্রায় ১৫ হাজার ১৫০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। সেই জেরেই জল থৈ থৈ করছে এলাকায়। বীরভূমের ময়ূরাক্ষীর জল বেড়ে যাওয়ায় ভাঙল সাঁইথিয়ার দুটি অস্থায়ি ফেরিঘাট। ব্যাহত হয়েছে সাঁইথিয়া-ময়ূরেশ্বর যোগাযোগ ব্যাবস্থা। এরই মধ্যে ময়ূরাক্ষীর উপর সিউড়ির তিলপাড়া ব্যারেজ থেকে প্রায় ৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে।
জেলাশাসক বিধান রায় রাতেই সমস্ত বন্যার্তদের বাড়িতে গিয়ে স্কুলগুলিতে থাকবার জন্য আর্জি জানান। সঙ্গে ছিলেন বিডিও হুমায়ুন চৌধুরীও। রবিবার সকালে আরো ৬ হাজার ৪৫ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। কামালপুর গ্রামের সঙ্গেও বিছিন্ন হয়েছে সংযোগ। সেচ দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, গত কিছুদিন ঝাড়খণ্ডে লাগাতার বৃষ্টি হয়েছে। সে সমস্ত জল জমা হয়েছে জলাধারাতে। চাপ নিতে না পারায় জল ছাড়া হয়।
অন্যদিকে ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন রায়গঞ্জনেরও বেশ কিছু এলাকা। রায়গঞ্জের পূর্ব কলেজপাড়ার পূর্বাশা পাড়ার বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন। বাড়ির মধ্যেও হাঁটু সমান জল।এলাকার বাড়িগুলির ভিতরে নোংরা জল ঢুকে পড়ায় চরম সমস্যায় পড়েছেন বাসিন্দারা। এই পরিস্থিতি স্থানীয় বাসিন্দারা পৌরসভার কর্তৃপক্ষের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলছেন।
বীরভূমের বাসিন্দা বলাই বাগদি জানিয়েছেন," ব্রিজের ওপর জল এবং তারই সঙ্গে ঘাট ভেঙে যাওয়ায় আমাদের কাজকর্ম করতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। কাল রাতেই ভেঙে গেছে ঘাট। গাড়ি চলাচল সবকিছুই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে"।
রায়গঞ্জের পৌরসভার প্রতিনিধি তালসা মন্ডল বলেন," গত কিছুদিন ধরে উত্তরবঙ্গের সাংঘাতিক বৃষ্টি হচ্ছে। সব জায়গায় অনেক অনেক জল জমে গেছে। আমরা আমদের এলাকার পাশে আছি মানুষের পাশে আছি। আমরা বেড়িয়েছি কোথায় ড্রেনের মুখ কেটে জল পাস করা যায়। সকলের বাড়ি বাড়ি জল জমেছে। যাতে দ্রুত জল নামানোর ব্যবস্থা করতে পারি সেটাই চেষ্টা করছি"।