২০ বছর ধরে উঠতে বসতে অত্যাচার করছে দাদা-বৌদি , প্রতিবাদে ধর্ণায় বসলেন তরুণী

অক্টোবর ১৬, ২০২২ দুপুর ১১:১০ IST

নিজস্ব প্রতিনিধি , হুগলী - পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ , যা শেষ পর্যন্ত মারাত্মক রূপ ধারণ করলো। কুড়ি বছর ধরে ঘটে চলা পারিবারিক অশান্তির অবশেষে চরম পরিণতি । বছরের পর বছর মা এবং ছোট ভাইয়ের উপরে হয়ে আসা শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচারের প্রতিবাদে ধর্ণায় বসলেন এক যুবতী l ঘটনাটির জেরে এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে , এদিন সকালে হুগলী জেলার ডানকুনি পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের চামুন্ডা মন্দির এলাকার বাসিন্দা পিয়ালী পাল হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে , চামুন্ডা মন্দিরে বাইরে ধর্ণায় বসেন। ঘটনাটি দেখতে ভিড় জমায় এলাকার একাধিক মানুষ । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে দ্রুত সমস্যাটির মীমাংসা করার আশ্বাস দেন।

এপ্রসঙ্গে নির্যাতিত পিয়ালী পাল জানিয়েছেন , তার বাবা কয়েক বছর আগেই মারা গেছেন। তার পরিবারের কেউ ততটা শিক্ষিত না হওয়ায় সম্পত্তি ভাগাভাগি হয়নি l এই সুযোগ নিয়ে তার বৌদি দীর্ঘদিন ধরে তার দাদার সহযোগিতায় তার ওপর দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে মানসিক অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তার পৈতৃক সম্পত্তি থেকেও তাকে বঞ্চিত করার পরিকল্পনা করছিলেন।

তিনি তার দাদার সম্মানের কথা ভেবে কুড়ি বছর সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করলেও , দিনের পর দিন তার ওপর ঘটে যাওয়া শারীরিক অত্যাচার দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় , তিনি সহ্য করতে না পেরে বিষয়টিকে নিয়ে বারংবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও এতে কোনও সুরাহা হয়নি।

নির্যাতিত পিয়ালী পালের মা গীতা পাল এবং তার মেজ দাদা জানিয়েছেন , গতকাল রাত্রিবেলায় তার দাদার ছেলে এবং স্ত্রী তাদের ঘরের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পিয়ালীকে বেধড়ক মারধর করেন। শুধু তাই না , তাদের ওপর চরম অত্যাচার করে তাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন । তাই তারা আজ ধর্ণায় বসতে বাধ্য হয়েছেন।

এদিকে পিয়ালী পালের বড় দাদা অর্থাৎ মূল অভিযুক্ত সমিত পাল জানিয়েছেন , তার এবং তার স্ত্রীর উপর ওঠা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে। তার অবিবাহিত বোন এবং তার ভাই মিলে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। তারা কখনও তাদের উপর অত্যাচার করেননি। উপরন্ত তার মা এবং তার বোনই তার স্ত্রীর ওপর বহু বছর ধরে নির্যাতন চালিয়ে আসছেন।

এপ্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর জানিয়েছেন , পিয়ালী পালকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়নি। তিনি স্বেচ্ছায় ধর্ণায় বসে ছিলেন তার অধিকারের দাবি নিয়ে । তিনি জনপ্রতিনিধি হিসেবে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য উভয় পক্ষকে একে অপরের প্রতি যা যা অভিযোগ আছে সেটা নিকটবর্তী থানায় লিখিত জানানোর পরামর্শ দেন।