নিজেস্ব প্রতিনিধি , নদীয়া - দীর্ঘ ১৫ মাস বাংলাদেশে জেল খাটার পর ভারতের জমিতে পা রাখলেন বঙ্গ সন্তান নাসির শেখ। নদীয়ার চাপড়ার ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় কৃষি জমিতে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে বাংলাদেশ নিয়ে গিয়ে জেলে বন্দি করা হয়। তবুও হার মানেনি তিনি, আজ দীর্ঘ ১৫ মাস পর সেই অপেক্ষারই অবসান ঘটল।

কোনো রকম মুভি নয়, এটি সত্যিই আসল ঘটনা। নদীয়ার চাপড়া থানার ব্রহ্মনগর এলাকার বাসিন্দা নাসির শেখ পেশায় একজন শ্রমিক। আজ থেকে ১৫ মাস আগে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ব্রহ্মনগর আনন্দবাস এলাকায় কৃষি জমিতে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েই বাংলাদেশের বিজিবির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। 

এরপর বিজিবির অফিসাররা বাংলাদেশ এলাকার স্থানীয় পুলিশের হাতে তুলে দেয় তাকে। পরে বাংলাদেশ পুলিশ প্রশাসন মারফত বাংলাদেশের আদালতে পেশও করা হয়। সীমান্ত পার করার অপরাধের অভিযোগে আদালত তাকে বাংলাদেশেই দুই মাস জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল।

এর মাঝে তার পরিবারের সদস্যরা অনেক চেষ্টা করেও তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে পারেনি। অবশেষে ভারত সরকারের উদ্যোগে দীর্ঘ ১৫ মাস পর বাংলাদেশ জেল থেকে মুক্তি পেলেন নাসির শেখ। গত শনিবার অর্থাৎ ৬ মে গেদে সীমান্ত দিয়ে ভারতের মাটিতে প্রবেশ করেন তিনি। ভারত ও বাংলাদেশের বিএসএফ ও বিজিবি সহ দুই দেশের পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে তাকে ভারতে ফেরত আনা হয়।

এই বিষয়ে নাসির শেখ জানান, দীর্ঘদিন পর বাড়িতে ফিরতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। কারাগারে কাটানো ওইদিন গুলি ভীষণ কঠিন ছিল। অনেক অসুস্থও হয়ে পরেছিলেন তিনি। মানসিক এবং শারীরিক ভাবে ভেঙে পরেছিলেন তিনি। তবে তিনি জানতেন যে কোনো না কোনো দিন এই জেল থেকে বেরিয়ে নিজের পরিবারের কাছে, নিজের দেশে ফিরে যেতে পারবেন। এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।

এই বিষয়ে নাসির শেখের বড়ো ভাই এবং চাপড়া এলাকার সদস্যরা জানান, তার পরিবার বলতে ছিল তার চার সন্তান। নাসির শেখ জেলে চলে যাওয়ার পর এই দেড় বছর অনেক কষ্টে দিন কাটতে থাকে তাদের। বাড়িতে তার সন্তানদেরকে দেখার মতো লোক ছিলনা। তবে গ্রাম পঞ্চায়েত এবং গ্রামের কিছু সদস্যদের উদ্যোগে তার কন্যাকে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমরা অনেক প্রচেষ্টা করে এবং ভারত সরকারের দারস্ত হওয়ার পর তাকে বাড়ি আনতে পেরেছি।