সারি গ্রাম থেকে দেওড়িয়াতাল

এপ্রিল ১৩, ২০২১ দুপুর ০৩:৩৯ IST
60756d65155fa_WhatsApp Image 2021-04-13 at 3.32.57 PM (2) 60756d6518ed9_WhatsApp Image 2021-04-13 at 3.32.57 PM (1) 60756d655faa9_WhatsApp Image 2021-04-13 at 3.32.58 PM (1) 60756d65600a2_WhatsApp Image 2021-04-13 at 3.32.57 PM 60756d659c743_WhatsApp Image 2021-04-13 at 3.32.58 PM

উখিমঠে একরাত কাটিয়ে পরের দিন রওনা দিয়েছিলাম সারি গ্রামের উদ্দেশ্যে, এখান থেকেই ২.৩ কিলোমিটার পথ বোল্ডার ফেলা রাস্তায় ট্রেক করে দেওরিয়াতালে পৌঁছানো যায় । ইচ্ছে করলে দেওরিয়াতালে রাত কাটানোর যেতে পারে, এখানে তাবুর ব্যবস্থা আছে । আমরা সারিতেই রাত কাটিয়ে ছিলাম । 

সকাল বেলাতে উখিমঠ দর্শন সেরে সবাই মিলে মৌজ করে এক কাপ করে চা পান করে নিলাম । ঠান্ডার মধ্যে এক কাপ চায়ের আমেজ অসাধারন ছিলো । তারপর এখান থেকে সকাল সারে আটটার সময়ে আমাদের গাড়ি রওনা দিলো সারি গ্রামের দিকে । সারি গ্রাম এখান থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটারের পথ । পথে প্রকৃতির শোভা দেখতে দেখতে কিছু সময়ের মধ্যেই আমরা এসে গেলাম সারি গ্রামে । সাজানো গোছানো একটি ছোটো গ্রাম, এখানেই আমাদের ঠিক হয়েছে লাখপথ সিং নেগির হোটেলে এক রাত থাকার জন্য । হোটেলে পৌঁছে মাল পত্র গুছিয়ে রেখে এখানেই ম্যাগি দিয়ে জল খাবার সেরে নিলাম । বেলা সাড়ে দশটার সময়ে রওনা দিলাম ২.৩ কিলোমিটার হাঁটা পথে দেওরিয়া তালের উদ্দেশ্যে । পুরো রাস্তাটাই খুব চড়াই এবং বোল্ডার ফেলা । প্রকৃতির শোভা দেখতে দেখতে কোনো জায়গাতে কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে  বিশ্রাম নিয়ে আবার পথ চলা, এই ভাবে ঘন্টা দুয়েক পরে অবশেষে দেওড়িয়া তালে এসে পৌঁছালাম । সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এই জায়গার উচ্চতা প্রায় ৭,৯৯৯ ফুট এবং চারদিক সবুজ বনানীতে ঘিরে আছে । এই সবুজ দেখতে দেখতে পথ চলার ক্লান্তি যেন অনেকটাই কেটে যায় । তারপর দূরে চৌখাম্বার চূড়ার দৃশ্য অসাধারন এবং ভাগ্য ভালো থাকলে এই শৃঙ্গের প্রতিবিম্ব দেওড়িয়াতালের জলেও দেখা যায় । তবে এই দৃশ্য দেখতে গেলে দেওরিয়াতালে রাত কাটালে ভোর বেলাতে এই দৃশ্য উপভোগ  করা যায়। দেওড়িয়াতালে প্রবেশ করার পর বন দপ্তর থেকে মাথা পিছু ১৫০ টাকা দিয়ে একটা টিকিট করাতে হয় এবং এই টিকিটের সময়সীমা তিনদিন থাকে ।

হিন্দুদের মতে দেবতা এখানে অবগাহন করেছেন বলে তার এইরূপ নাম হয়েছে । আবার অনেকে এই জায়গাকে ইন্দ্রসরোবরও বলে থাকেন । তবে এখানকার সাধারন লোকের বিশ্বাস যে যুধিষ্ঠিরের আদেশে ভীম এই সরোবর তৈরী করেন । কারন পঞ্চপান্ডবের মধ্যে ভীমই ছিলেন সবথেকে বেশী শক্তিশালী । এই জায়গার প্রকৃতি অপরূপ সুন্দর । যখন হিমালয়ের বিভিন্ন শৃঙ্গরাশির প্রতিবিম্ব এই জলে দেখা যায় তখন এই দৃশ্য যিনি উপভোগ করেন তিনি তা কোনোদিনই ভুলতে পারেননা  । এখানে চারদিকে নীল আকাশ আর সবুজ গাছের ছড়াছড়ি মানুষের মনকে অচিনপুরে নিয়ে যায় । তার সাথে এখানে উপরি পাওনা হলো সব সময়ে বিভিন্ন পাখির কলতান । পাখির কলতানে এখানে সবসময়ে মুখর হয়ে থাকে । এখানকার সবুজ মাঠের গালিচায় গা টাকে এলিয়ে দিয়ে আকাশ আর তালের জলের পানে তাকিয়ে থাকতে থাকতে মনটা যেন কোথাও হারিয়ে যাবার উপক্রম হয়ে পড়ে । তারপর সবকিছুকে ফেলে দিয়ে আবার পিছন দিকে হাঁটা পথে সারি গ্রামে ফিরে আসা । ফিরে আসাটাই যেন বেদনাদায়ক । মনে হয় আরো কিছুক্ষন যদি এখানে কাটানো যেতো । কিন্তু একটা সময়তো ফিরতেই হবে । তাই আবার সারি গ্রামের দিকে আবার ফিরে যাওয়া ।

হাওড়া থেকে ট্রেনে হরিদ্বার হয়ে গাড়ি ঠিক করে নিয়ে উখিমঠে পৌঁছে এখানে একরাত থেকে পরের দিন সারি গ্রামে আসা যেতে পারে । ইচ্ছা করলে সারি গ্রামে থাকা যেতে পারে অথবা হাঁটা পথে দেওড়িয়া তাল পৌঁছে এখানে তাঁবুতে একরাত কাটানো যেতে পারে । এখানে ঘোরার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন সৌমিশ্র মিত্রের সাথে । 

মোবাইল নাম্বার হলো – ৭০৬০৭৫৫৮০০9 (Whattasapp Number) ৯৭৫৬৯৯৯৩১৬. এছাড়া সারি গ্রামে থাকার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন লাখপত সিং নেগীর সাথে । মোবাইল নাম্বার হলো – ৯৪৫৬২৬৪৫৭৫.

 বছরের বর্ষার দিন বাদ দিয়ে সেপ্টেম্বর – অক্টোবর থেকে এখানে যাওয়া যেতে পার এবং ঠান্ডার সময়ে এখানে ঠান্ডা যথেষ্ট থাকে, সেইজন্য ঠান্ডার জন্য উপযুক্ত পোশাক সাথে করে নিতে হবে ।

 

 

আরও পড়ুন

ভগবান শিবের এক অপরূপ নিদর্শন দেখা যায় অসমের মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্দিরে
মে ২৯, ২০২৩

এটি বিশ্বের বৃহত্তম শিব লিঙ্গের মধ্যে একটি, যার উচ্চতা প্রায় ১২৬ ফুট

কলকাতার ঐতিহ্যবাহী সেন্ট জেমস চার্চ
মে ২৮, ২০২৩

কি কারণে গির্জাটিকে স্থানান্তরিত করা হয়, দেখে নিন তার ইতিহাস

বোর্ডেন হাউস, পর্ব - ২৫ ঠিক দুপুর বেলা ভূতে মারে ঠ্যালা
মে ২৭, ২০২৩

রহস্যপ্রেমী জন্য বিশেষ ঠিকানা ও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হলো এই স্থান
 

ইতিহাসের অন্যতম নিদর্শন পানিপথের কাবুলি বাগ মসজিদ
মে ২৬, ২০২৩

প্রায় ৪৯৫ বছর আগে নির্মিত হয়েছিল

শিমলার ঐতিহ্যবাহী তারা দেবীর মন্দির
মে ২৫, ২০২৩

মন্দিরটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭২০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এবং শিমলার প্রধান শহর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত

অরুণাচল প্রদেশে অবস্থিত ভারতের বৃহত্তম বৌদ্ধ মঠ
মে ২৪, ২০২৩

এই মঠটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৩০০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত

লাদাখের বিখ্যাত মনেস্ট্রি হেমিস গুম্ফা
মে ২৩, ২০২৩

এটি ১৬৭২ সালে লাদাখি রাজা সেঙ্গে নামগিয়ালের দ্বারা পুনরায় প্রতিষ্ঠা হয়েছিল

প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের নিদর্শনের ঠিকানা লাইটলুম গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন
মে ২৩, ২০২৩

এটি শিলং শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি

কলকাতায় অবস্থিত প্রথম গ্রীক অর্থোডক্স চার্চ
মে ২১, ২০২৩

এটি ১৭৫২ সালে নির্মাণ করা হয়েছে

লাদাখ ট্যুরে ভিসিট লিস্টে অবশ্যই রাখবেন নুব্রা লেক
মে ২১, ২০২৩

রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পেটে অবশ্যই ঘুরে আসুন এখানে

মধ্যপ্রদশের ঐতিহ্যবাহী মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির
মে ২১, ২০২৩

অনেকেই মনে করেন যে এই মন্দিরেই স্বয়ং ভগবান শিবের বাস

ত্রিপুরা গেলে অবশ্যই ঘুরে আসুন জম্পুই-হিলে
মে ২০, ২০২৩

আগরতলা থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরত্বে এটি অবস্থিত

উইপ্রো অফিস সল্টলেক সেক্টর ৫, পর্ব - ২৪ ঠিক দুপুর বেলা ভূতে মারে ঠ্যালা
মে ২০, ২০২৩

কলকাতার খুব অসম্ভাব্য ভুতুড়ে জায়গাগুলির মধ্যে একটি

ভিডিয়ো