গুপ্তিপাড়া বহু পুরানো ইতিহাস সাক্ষ্য আজও বহন করে চলেছে। গুপ্তীপাড়া হুগলী জেলাতেই অবস্থান করছে কিন্তু নদীয়া , হুগলী ও বর্ধমান এই তিন জেলার খুব কাছাকাছি জায়গা। পুরানো ইতিহাস থেকে জানা যায় এই জায়গাটির নামকরন হয়েছে গুপ্তোপল্লী থেকে। ১৫৮৫ সালে সম্রাট আকবরের সময়কালে জগৎগুরু শঙ্করাচার্যের প্রধান শিষ্য সত্যদেব স্বরসতী গুপ্তিপাড়াতে বৃন্দাবন চন্দ্র ( ভগবান বিষ্ণু ) একটি মন্দির স্থাপন করেছিলেন। ধারনা করা হয় কালাপাহাড় নামে এক মুসলিম সেনাপতির আক্রমনে সময় বৃন্দাবন চন্দ্রের মূর্তিটি একটি একটি ফ্রেস্কো চিত্রের আরালে মন্দিরের গোপন সিলিং – এর মধ্যে লুকিয়ে রাখা হয়েছিলো। পরবর্তীকালে এই গুপ্ত বা লুকানো কথা থেকেই এই জায়গার নাম হয়তো গুপ্তিপাড়া। গুপ্তিপাড়া মধ্যযুগীয় বাংলায় সংস্কৃত শিক্ষার কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত হয়েছিল। এমনকি ব্রিটিশ আমলে এখানে প্রায় ৮০ টি টোল ( প্রাথমিক বিদ্যালয় ) ছিল।বাংলায় আলীবর্দী খাঁ তার শাসনকালে তিনি লক্ষ্য করেন একটি জমির খাজনা অনেক দিন ধরে শোধ করা হয়নি, খোঁজ নিয়ে জানা গেলো সেই জমি বৃন্দাবন চন্দ্রের নামে, তাই তাকে দরবারে হাজির হতে বলা হয়েছিল । যেহেতু বৃন্দাবন চন্দ্র ঠাকুরের মূর্তি ছিলো, তাই তাঁর উপাসকরা প্রতিকৃতি তৈরী করে দরবারে উপস্থিত হলেন । দেবতা দেখে আলীবর্দী খাঁ অবাক হয়ে গেলেন এবং তিনি সেই সময়ে সমস্ত বকেয়া কর মুক্ত করে দিয়েছিলেন, সেই স্থানে মন্দির নির্মানের অনুমতি দিয়েছিলেন। গুপ্তিপাড়ার মূল আকর্ষন হলো এখানকার মন্দির । এখানে চারটি মন্দির আছে সেগুলি হলো – কৃষ্ণচন্দ্র, চৈতন্য , বৃন্দাবন চন্দ্র ও রামচন্দ্র । বিভিন্ন সময়ে এই মন্দির গুলি নির্মিত হয়েছিল এবং বিভিন্ন সময়ের শিল্প নৈপুন্য এখানে ফুটে উঠেছে। প্রবেশ পথের বামদিকের মন্দিরটি হলো কৃষ্ণচন্দ্রের মন্দির, এই মন্দির ১৭৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। ১৮০৭ সালে বাগবাজারের জমিদার গঙ্গানারায়ন সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বৃন্দাবনচন্দ্র মন্দিরের প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো।
শ্রী চৈতন্য এবং শ্রী নিত্যানন্দ মহাপ্রভুকে উত্সর্গীকৃত চৈতন্য মন্দিরটি প্রাচীনতম। এই মন্দির নির্মাণ করেছিলেন রাজা বিশ্বেশ রায়।মন্দিরটি কৃষ্ণচন্দ্র এবং বৃন্দাবন চন্দ্র মন্দিরের মধ্যে অবস্থিত।
ডানদিকে মন্দিরটি হলো রামচন্দ্র মন্দির যাতে রাম এবং লক্ষ্মণের দুটি হলুদ প্রতিমা রয়েছে। এটি পোড়ামাটির কাজের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী আকর্ষনীয় ।রামচন্দ্র মন্দিরটি উনিশ শতকের শেষদিকে শেওরাফুলির রাজাহরিশচন্দ্র রায় নির্মাণ করেছিলেন।এটিকে কমপ্লেক্সের সবচেয়ে মার্জিত মন্দির বলা যেতে পারে। এই মন্দিরের পোড়ামাটির কাজ অসাধারন ।খোদাই করা রামায়ণ, রাজকীয় শোভাযাত্রা, ভ্রমণ এবং প্রতিদিনের জীবনের ঝলক থেকে যুদ্ধের চিত্র চিত্রিত করা আছে ।
গুপ্তিপাড়া রথযাত্রার জন্য বিখ্যাত।গুপ্তিপাড়ায় রথ উত্সব ওড়িশার পুরীর পরে শ্রীরামপুরে মহেশ এবং পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের পরে ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম। এছাড়া গুপ্তিপাড়া মন্দিরে প্রবেশ করার আগে ৫৫০ বছরের একটি কালী মন্দির আছে । কথিত আছে ডাকাতরা ডাকাতি করার আগে এই মন্দিরে পূজা দিয়ে ডাকাতি করতে যেতো। এই স্থান পঞ্চমুন্ডীর পীঠস্থান হিসাবে বিখ্যাত । পুরানো ভাঙ্গা মন্দিরকে সংস্কার করে পুরানো রূপে এই মন্দিরকে আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে । এছাড়া আছে সাতমহল্লা পুরানো বাড়ী । এক কথায় গুপ্তিপাড়া জায়গাটি একদিনের সফরের জন্য একটি আদর্শ জায়গা।
কিভাবে যাবেন : হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে কাটোয়া লোকাল ধরে সোমরাবাজার বা বেহুলা স্টেশনে নেমে অটো বা টোটো ভাড়া করে নিয়ে অতি সহজেই এই জায়গাগুলির দর্শন করে নেওয়া যেতে পারে।
এই মন্দির প্রাচীন ধ্রুপদী বাংলা মাতৃকা উপাসনা ও শক্তি আরাধনার চিহ্ন বহন করছে
ব্যস্তবাগীশ জীবনে একদিন ছুটি নিয়ে ঘুরে আসুন
একটি পুরাতাত্ত্বিক স্থাপত্য যা প্রায় ৩৭৯ বছর আগে নির্মিত
ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ভারতের বৃহত্তর চার্চ
এই হোটেল থেকে লেডি গারনেট ওমর মহিলার গলা আজও পাওয়া যায়
বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন মানুষের ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে মন্দির চত্বর
আগামী ১৫ই ফেব্রুয়ারি থেকে বিমান পরিষেবা চালু হবে
কায়রোর মিউজিয়ামে এসে কুমিরের মমি দেখে মনে হয়েছে হয়তো মিশরের একমাত্র দেবতাই হয়তো কুমির
এটি গ্র্যান্ড মসজিদ নামেও পরিচিত
তাড়াতাড়ি ঘুরে আসুন
দলমা পাহাড়ের নীচের অরণ্য যেন সৌন্দর্যের আঁতুড়ঘর
শিবচতুর্দশী তিথিতে ব্রত উৎসব চলাকালীন হাজার হাজার দর্শনার্থীদের ভোগ প্রসাদ বিতরণ করা হয়
এই শক্তিপীঠের অপর নাম নর্মদা মন্দির ও এখানে পতিত হয়েছিল দেবীর বাম নিতম্ব
মন মাতানো কীর্তন শুনেই কেটে যাবে গোটা বেলা
মেলার থিম এবার কান্ট্রি স্পেন এবং চলবে ৩১ জানুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত