তৃতীয় ইন্তিফাদার সূচনা , ইজরায়েল-প্যালেস্তাইনের যুদ্ধে কাঁপছে পশ্চিম এশিয়া , রাস্তায় পড়ে ছিন্নভিন্ন মরদেহ

অক্টোবর ০৮, ২০২৩ দুপুর ০১:০৯ IST
652256e8dd58c_dcab4cd10dc2

নিজস্ব প্রতিনিধি , জেরুজালেম - তবে কি তৃতীয় ইন্তিফাদার সূচনা হলো! এরপ্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে। সম্প্রতি নতুন বছর শুরু করেছে হিব্রুরা। আর এই উপলক্ষ্যে ইজরায়েলে চলছিল সুখত উৎসব। শনিবার ছিল এই উৎসবের শেষ দিন। এরমাঝেই পুরো চিত্রটা বদলে গেল। শনিবার ছুটির দিনে সকালে মাত্র ২০ মিনিটের ব্যবধানে প্যালেস্টাইনের জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস গাজা থেকে ইজরায়েলকে লক্ষ্য করে ৫ হাজার রকেট ছুড়েছে। আর পাল্টা জবাব দিতে শনিবার বিকেলে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে ইজরায়েল।

সূত্রের খবর , হামাস বাহিনীর হামলাতে ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন ইসরাইলের ৫০০ এর বেশি মানুষের। আহত হয়েছেন প্রায় ৪ হাজারেরও বেশি। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা ইজরায়েল সরকারের। আবার অন্যদিকে ইজরায়েলের রকেট হামলায় গাজা স্ট্রিপে প্রাণ গেছে হাজারেরও বেশি মানুষের।পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

সূত্রের খবর , ইজরায়েলের আনাচে কানাচে এই মুহূর্তে প্রচুর পরিমাণে হামাস বাহিনী লুকিয়ে রয়েছে। তারা যেকোনো সময় যেখানে সেখানে হামলা চালাতে পারে। তাই সাধারণ নাগরিকদের সতর্ক থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দফতরের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে , উচ্চপদস্থ সেনা আধিকারিক এবং প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অহরহ বৈঠক করা হচ্ছে। এই যুদ্ধে জয়ী হতে সারাক্ষণ চেষ্টা চালাচ্ছে ইজরায়েল। 

একইসঙ্গে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আগ্রাসী কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন , কোনও সাধারণ সংঘাত নয়, এটা যুদ্ধ। এই যুদ্ধে জয়ী হবে ইজরায়েলই। সঙ্গে হামাসকে এর মূল্য চোকাতে হবে।

আবার ইজরায়েলের সামরিক বিমান বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে , হামাসকেও পাল্টা জবাব দেওয়া হচ্ছে।কয়েক ডজন যুদ্ধবিমান গাজা উপত্যকায় জঙ্গি সংগঠন হামাসের ১৭টি সামরিক কমপ্লেক্স এবং ৪টি সদর দফতরে হামলা চালানো হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ইজরায়েলে রকেট ছোড়া হচ্ছে। সেনারা অন্তত সাতটি জায়গায় অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে লড়াই করছে।

প্রসঙ্গত , প্যালেস্টাইন ও ইজরায়েলের সম্পর্কের এই সমীকরণ নতুন কিছু নয়। ক্ষণেক্ষণেই তাদের মধ্যে যুদ্ধমুখর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তবে কারণ কি? আসলে ইজরায়েল হল ছিল এমন একটি দেশ , যেখানে একসঙ্গে ইহুদি আর মুসলিমদের বসবাস ছিল। সেখানে সংখ্যালঘু ইহুদিরা আর মুসলিমরাই ছিল সংখ্যাগুরু। তবে ব্রিটেনের উপর আন্তর্জাতিক চাপ আসছিল যাতে প্যালেস্টাইনকে ইহুদিদের দেশে পরিণত করা হয়। দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয় তখন থেকেই। আর এই দ্বন্দ্ব আরও বাড়ে , যখন প্যালেস্টাইনে ইহুদিদের সংখ্যা বাড়তে থাকে।

এরমাঝেই গত কয়েক দশকে সমীকরণ আরও বদলে যায়। যখন প্যালেস্টাইনের ধর্মগুরু শেখ আহমেদ ইয়াসিনের নেতৃত্বে তৈরি হয় হামাস গোষ্ঠী। গাজা স্ট্রিপের ২০ লাখের বেশি মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে এই হামাস। যাকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে একাধিক দেশ। আর এই গাজা স্ট্রিপ কার দখলে তা নিয়েই মূলত যুদ্ধ‌মুখর দুই দেশ। তবে প্যালেস্টাইন যাতে সহজে হামলা চালাতে না পারে , তার জন্য দেশের সীমান্তে থাকা গাজা স্ট্রিপের উপর কঠোর নজরদারি চালায় ইজরায়েল। 

আর এই বিষয়ে প্যালেস্টাইনের দাবি , নজরদারি চালানোর নামে তাদের উপর অত্যাচার করে ইজরায়েল। রীতিমত খাবার, জল পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে নজরদারি কোনোভাবেই বন্ধ করা হবে না , তা কঠোরভাবে জানানো হয় ইজরায়েলের তরফে। আর বর্তমানে এই দ্বন্দ্বই নতুন করে যুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তবে এই যুদ্ধের পরিণতি কতটা ভয়ঙ্কর হবে তা সময়ই বলবে।

ভিডিয়ো

Kitchen accessories online