অমৃতবাজার এক্সক্লুসিভ - হিন্দু পুরাণ হল হিন্দুধর্ম সংক্রান্ত অজস্র ঐতিহ্যবাহী কথামালার একটি বৃহৎ রূপ।এই হিন্দু পুরানে দেবী,দেবতা ও অসুরের বিভিন্ন কাহিনী বর্ণিত রয়েছে। পুরাণ অনুসারে, দেবরাজ ইন্দ্রের একটি ভুলের কারণে ইন্দ্রের শরীরে ১০০০টি চোখ দেখা দিতে শুরু করে। তাহলে জেনে নেওয়া যাক ইন্দ্রের শরীরে কেন ১০০০ টি চোখের সৃষ্টি হয়েছিল।
কাহিনী - একবার দেবরাজ ইন্দ্র আকাশপথে যাচ্ছিলেন। পথে তাঁর চোখ যায় গৌতম ঋষির আশ্রমে। আশ্রমের কাছে ইন্দ্র এক যুবতীকে দেখতে পেলেন। এই সুন্দরী যুবতী ছিলেন ঋষি গৌতমের স্ত্রী ছিলেন অহল্যা, যিনি সারাজীবন যৌবন ধরে রাখার বর পেয়েছিলেন। তাঁর সৌন্দর্য দেখে অপ্সরাদের মধ্যে বসবাসকারী ইন্দ্রও কামুক হয়ে পড়েন এবং অহল্যাকে পাওয়ার পরিকল্পনা করতে থাকেন।
চন্দ্রদেবের ইন্দ্রের কার্যে সহায়তা - এক রাতে ইন্দ্র তাঁর ষড়যন্ত্রে চাঁদকে সামিল করলেন। তখন চন্দ্রদেব মোরগ হয়ে মাঝরাতে ডেকে উঠলেন। এই কারণে ঋষি গৌতমের মনে হয় ভোর হয়ে আসছে। ঋষি স্নানের জন্য কুঁটির থেকে বেরিয়ে গেলেন। এই সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলেন ইন্দ্র। তিনি গৌতমের ছদ্মবেশে কুটিরে প্রবেশ করলেন। অহল্যা প্রথমে সন্দেহ করলেও পরে আর কোনও প্রশ্ন করলেন না।
গৌতমের অভিশাপ প্রদান - নদীর ধারে গিয়ে গৌতম ঋষিও বুঝতে পারলেন যে এখনও রাত্রি রয়েছে এবং তিনি মাঝপথে কুটিরে ফিরে গেলেন। সেখানে পৌঁছে তিনি দেখলেন একজন তাঁরই ছদ্মবেশে ঘর থেকে বেরিয়ে আসছে। তখন ঋষি গৌতম বুঝতে পারলেন ইন্দ্রদেব তাঁর ছদ্মবেশ ধরে এসেছিলেন। ক্রুদ্ধ ঋষি অহল্যার কথা না শুনেই তাঁকে শিলা হয়ে যাওয়ার অভিশাপ দিয়ে বললেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ভগবান রামের পাদস্পর্শ অহল্যার উপর না পরে ততক্ষণ অহল্যা এখানে পাথর হয়ে থাকবে। তিনি অভিশাপ দিলেন ইন্দ্রকেও।
গৌতম ঋষির অভিশাপের ফলে ইন্দ্রের সমস্ত শরীরে যোনি আবির্ভূত হয়। ইন্দ্র তাঁর নিজের অবস্থা দেখে খুবই লজ্জিত হলেন। বারবার ঋষির কাছে ক্ষমা চাইলেন, কিন্তু গৌতম ক্ষমা করলেন না। এরপর দেবরাজ সূর্যদেবের তপস্যা করেন। সূর্যদেব ইন্দ্রকে বললেন তাকে শাস্তি ভুগতেই হবে তবে সে এইটুকু পারবে যে ইন্দ্রের শরীরে সৃষ্টি হওয়া যোনি চোখ হয়ে যাবে। তাই কথিত আছে ইন্দ্রের এক হাজার চোখ আছে যা ইন্দ্রের অপকর্মের গল্প বলে।