অমৃতবাজার এক্সক্লুসিভ - হিন্দু পুরাণ হল হিন্দুধর্ম সংক্রান্ত অজস্র ঐতিহ্যবাহী কথামালার একটি বৃহৎ রূপ, যা প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্য। এই হিন্দু পুরানের অন্যতম দেবতা হলো জগন্নাথ। জগন্নাথ হলেন একজন হিন্দু দেবতা। জগন্নাথ হলেন হিন্দু দেবতা বিষ্ণু বা তাঁর অবতার কৃষ্ণের একটি বিশেষ রূপ। বিষ্ণু বা কৃষ্ণের বিমূর্ত রূপ হলো জগন্নাথ দেব।
চেহারা - জগন্নাথের মূর্তি সাধারণত কাঠে তৈরি করা হয়। 'নিম্ব বৃক্ষ' বা নিম গাছের কাঠ দ্বারা জগন্নাথ দেবের প্রধান বিগ্রহগুলো (জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা) নির্মিত। এই মূর্তির চোখদুটি বড়ো বড়ো ও গোলাকার। হাত অসম্পূর্ণ। মূর্তিতে কোনো পা দেখা যায় না। বিগ্রহে অসম্পূর্ণ হাত ও পায়ের অনুপস্থিতি নিয়ে নানান ধরনের মতবাদ এবং পবিত্র বিশ্বাস প্রচলিত রয়েছে।
সৃষ্টি - মূর্তিনির্মাণের জন্য রাজা একজন উপযুক্ত কাষ্ঠশিল্পীর সন্ধান করতে থাকেন। তখন এক রহস্যময় বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ কাষ্ঠশিল্পী তার সম্মুখে উপস্থিত হয়েছিলেন এবং মূর্তি নির্মাণের জন্য কয়েকদিন চেয়ে নিয়েছিলেন। সেই কাষ্ঠশিল্পী রাজাকে জানিয়ে দিয়েছিলেন মূর্তি নির্মাণকালে কেউ যেন তার কাজে বাধা না দেন। বন্ধ দরজার আড়ালে শুরু হয় কাজ।
রাজা ও রানী সহ সকলেই নির্মাণ কাজের ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রহী হয়ে ওঠেন। প্রতিদিন তারা বন্ধ দরজার কাছে যেতেন এবং শুনতে পেতেন ভিতর থেকে খোদাইয়ের আওয়াজ ভেসে আসছে।তিনি ৬-৭ দিন বাদে যখন রাজা বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন এমন সময় আওয়াজ বন্ধ হয়ে যায়। অত্যুৎসাহী রানি কৌতূহল সংবরণ করতে না পেরে দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে দেন। দেখেন মূর্তি তখনও অর্ধসমাপ্ত এবং কাষ্ঠশিল্পী অন্তর্ধিত।
এই রহস্যময় কাষ্ঠশিল্পী ছিলেন স্বয়ং দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা। মূর্তির হস্তপদ নির্মিত হয়নি বলে রাজা বিমর্ষ হয়ে পরেন। কাজে বাধাদানের জন্য অনুতাপ করতে থাকেন। তখন দেবর্ষি নারদ তাঁর সম্মুখে আবির্ভূত হয়েছিলেন। নারদ রাজাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন এই অর্ধসমাপ্ত মূর্তি পরমেশ্বরের এক স্বীকৃত স্বরূপ।
মন্দির - পুরীর জগন্নাথ মন্দির ভারতের অন্যতম প্রসিদ্ধ মন্দির ছিলেন। জগন্নাথ মন্দিরে অহিন্দুদের প্রবেশ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ছিল। কলিঙ্গ স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই মন্দিরটি শ্রীমন্দির নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন। গর্ভগৃহের মাথায় রয়েছে একটি সুউচ্চ শিখর বা চূড়া। প্রদীপ উৎসর্গের জন্য রয়েছে ফসিল হয়ে যাওয়া কাঠের একটি স্তম্ভ ছিল।
মন্দিরের প্রধান দ্বার সিংহদ্বারের রক্ষক দেবতা জয় ও বিজয়। মূল প্রবেশপথের সামনে রয়েছে অরুণস্তম্ভ নামে একটি স্মৃতিস্তম্ভ ছিল। মন্দিরের প্রধান দ্বার সিংহদ্বারের রক্ষক ছিলেন দেবতা জয় ও বিজয়।পুরীর রাজা রথে ঝাঁট দিয়ে সেবা করেছিলেন যাকে ছেরাপহরা বলা হয়।
মন্দির - ভারতের ওড়িশা, ছত্তিশগড় ,পশ্চিমবঙ্গ , ঝাড়খন্ড , বিহার , অসম , মণিপুর ও ত্রিপুরা রাজ্যে জগন্নাথ দেবের মন্দির রয়েছে। আপনারা চাইলে ঘুরে আসতে পারেন এই স্থান থেকে।