অমৃতবাজার এক্সক্লুসিভ - হিন্দু পুরাণ হল হিন্দুধর্ম সংক্রান্ত অজস্র ঐতিহ্যবাহী কথামালার একটি বৃহৎ রূপ, যাকে প্রাচীন সংস্কৃত সাহিত্যের অন্যতমও এক রূপও বলা চলে।হিন্দু পুরাণের অন্যতম দেবী হলেন মনসা। আপনারা চাইলে জেনে নিতে পারেন সর্পের দেবী বিষহরির কাহিনী।
পরিবার - মনসা হলেন নাগ-রাজ (সর্পরাজ) বাসুকীর ভগিনী এবং ঋষি জরৎকারুর স্ত্রী।তাঁর অপর নামগুলি হল বিষহরি বা বিষহরা (বিষ ধ্বংসকারিণী), নিত্যা (চিরন্তনী) ও পদ্মাবতী।তাছাড়া তিনি ছিলেন শিবের স্বীকৃতকন্যা।
চেহারা - মনসার মূর্তিতে তাকে সর্প-পরিবেষ্টিত নারী রূপে দেখা যায়। তিনি একটি হংস বা পদ্মের উপর বসে থাকেন। তাঁর বাহন হাঁস ও সাপ। তাঁর চার হাত। তার উপরের দুটি হাতে থাকে পদ্ম ও নীচের দুটি হাতে থাকে সাপ। সাতটি সাপের ফনা তার মাথার উপর ছাউনির আকারে বিরাজ করে। কোনো কোনো মূর্তিতে তার কোলে একটি শিশুকে দেখা যায়। এই শিশুটি তার পুত্র আস্তিক। তাকে ‘একচক্ষু-বিশিষ্ট দেবী’ বলা হয়। মনসার মা চণ্ডী ক্রোধের বসে তাঁর একটি চোখ পুড়িয়ে দিয়েছিলেন।
দেবত্ব - মনসামঙ্গল বা পদ্মাপুরাণ কাব্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। তাই এই কাব্যকে মনসামঙ্গল বা পদ্মাপুরাণ বলে। মনসা হলেন প্রাক-পৌরাণিক দেবী।ইনি প্রাচীন পুরাণে স্থান পাননি অথচ লোকব্যবহারে ও লোকসাহিত্যে অর্বাচীন বৈদিককাল থেকে বিভিন্ন রূপ পরিবর্তন করে চলে আসছেন।
চাঁদ সদাগর ও মনসা - দেবী মনসাকে দেবী হিসেবে স্বীকৃতি পেতে হলে চাঁদ সদাগরের হাতে পুজো গ্রহণ তার কাছে বাধ্যতামূলক ছিল। কিন্তু চাঁদ সঙ্কল্প করেছিলেন, তিনি মনসার পূজা করবেন না। মনসা চাঁদকে ভয় দেখানোর জন্য একে একে চাঁদের ছয় পুত্রকে হত্যা করলেন। শেষে মনসা ইন্দ্রের রাজসভার দুই নর্তক-নর্তকীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। এঁদের নাম ছিল অনিরুদ্ধ ও ঊষা। অনিরুদ্ধ চাঁদ ও তার স্ত্রী সনকার সপ্তম পুত্র রূপে জন্মগ্রহণ করলেন। তার নাম হল লখিন্দর। ঊষা বেহুলা নামে জন্মগ্রহণ করলেন।
লখিন্দর ও বেহুলার বিবাহ হল। মনসা লখিন্দরকে হত্যা করলেন। কিন্তু বেহুলা স্বামীর মৃতদেহ নিয়ে নদীতে ভেসে চললেন। শেষে তিনি চাঁদের সাত পুত্রের প্রাণ ও হারানো সম্পদ পুনরুদ্ধার করার উপায় জেনে ফিরে চাঁদ মনসার দিকে না তাকিয়েই বাঁ হাতে তার দিকে ফুল ছুঁড়ে দিলেন। মনসা এতেই খুশি হয়ে দেবীত্ব লাভ করলেন এবং তিনি চাঁদের পুত্রদের জীবন ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
দেবীর পুজো - আষাঢ় মাসের কৃষ্ণাপঞ্চমী তিথিকে বলা হয় নাগ পঞ্চমী। এই সময় বাড়ির উঠানে সিজগাছ স্থাপন করে মনসাদেবীর পূজা করা হয়। ভাদ্রমাসের কৃষ্ণাপঞ্চমী তিথিতেও মনসাপূজার বিধান আছে।
মন্দির - ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের ঝাঁকলাই দেবী, ঝাড়খন্ডের কন্দ্রার মনসা দেবী মন্দির, তাছাড়া বাংলাদেশের শ্রীহট্টে উল্লেখযোগ্য মন্দির চালিবন্দর বিষহরি বাড়ি ইত্যাদি রয়েছে।আপনারা চাইলে ঘুরে আসতে পারেন এই স্থানগুলো থেকে।
এই ফুটবল প্রতিযোগিতায়
চ্যাম্পিয়ন হয় অর্ণব অন্বেষা সম্প্রীতি একাদশ।
শিশির মঞ্চে বিভাব নাট্য একাডেমি মঞ্চস্থ করলো তাদের দুটি নতুন নাটক ' জীবনের এক রূপকথা' ও ' দিনান্তে।