নিজস্ব প্রতিনিধি , নদীয়া - রাতের অন্ধকারে দেদার চলছে কবরস্থানে অসামাজিক কাজকর্ম। বহুবার জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা গুলিকে জানিয়েও মেলেনি কোন সুরাহা। বছরের পর বছর একই রকম ঘটনা ঘটে চলায় এবার সরকারের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করলেন নদীয়ার সংখ্যালঘু সমাজের সদস্যরা।

সূত্রের খবর, প্রতিবছর ঈদের ইফতারে কিংবা নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রতিশ্রুতি দেয় কবরস্থান সংস্করণের কথা। অথচ প্রতিশ্রুতি রাখতে কোন সরকারিক আধিকারআধিকারিক এলাকায় ফিরে তাকায়নি বলেই অভিযোগ। প্রত্যেকদিন রাতে হলেই শুরু হয় কবরস্থানে অসামাজিক কাজকর্ম। কেটে ফেলা হয় বিভিন্ন গাছ। মধ্যরাতে আগুন জ্বলে কবরস্থানে। এছাড়াও কবরস্থান রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নেই কোন স্থায়ী কর্মী সহ পানীয় জল ও অপেক্ষা গৃহ। তাই আগামী দিনে কবরস্থানের সংস্করণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে স্থানীয়রা।

এই বিষয়ে জেলার সংখ্যালঘু সেলের সম্পাদক ইনসান শেখ জানিয়েছেন,'গত ইফতারে শান্তিপুর পৌরসভা থেকে জানানো হয়েছিলো, প্রতিটা কবরস্থানে অন্তত একজন করে কর্মী নিয়োগ করা হবে, কিন্তু তা এক বছরের মধ্যে সম্ভবপর হয়ে উঠল না। তাই দেখভালের অধিকার থেকে কবরস্থানগুলির মালিক হয়ে উঠেছে পুরসভা। বিদ্যুতিক আলো, পানীয় জল, বিশ্রামাগারের এখনো পর্যন্ত কোন সুব্যবস্থা নেই। এর আগেও এই ধরনের নানা বিষয় নিয়ে ডিএম, এসডিও, বিডিও সহ স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন পৌরসভা ওয়াকফ বোর্ড, সমস্ত জায়গায় লিখিত জানিয়েও মেলেনি ফল। তবে গণ-আন্দোলনের ফলে মিলে ছিল কিছু কবরস্থানের প্রাচীর নির্মাণ। এরপরেও প্রশাসনের তরফ থেকে কোন ভূমিকা না নিলে আগামী দিনে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হব'।

অন্যদিকে শান্তিপুর শহর তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি ইয়ার আলী মল্লিক বলেন,' একেবারেই কাজ হয়নি তা নয়। তবে অত্যন্ত দুঃখের বিষয় সমগ্র সমাজের কথা মাথায় রেখে সেই অনুযায়ী উন্নয়ন পৌঁছাচ্ছে না। তবে আমরা আশাবাদী আগামী দিনে বিষয়গুলো নিয়ে নিশ্চয়ই মানবিক মুখ্যমন্ত্রী চিন্তা করবেন। সম্প্রতি নদীয়া জেলা কমিটির সংখ্যালঘু সভাপতি হিসেবে পুনঃ মনোনীত জুলফিকার আলী তিনিও যথেষ্ট চেষ্টা চালাচ্ছেন সারা জেলা জুড়ে এই ধরনের সমস্যা সমাধানের'।

জেলার সংখ্যালঘু সংগঠনের সম্পাদক মইনুদ্দিন আহমেদ খান বলেন,বিগত দিনে  বিধায়ক এবং চেয়ারম্যান হিসাবে শান্তিপুরের দায়িত্বে থাকা প্রয়াত অজয়দের হাত ধরে কবরস্থানে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তবে কবরস্থানে কর্মী নিয়োগের ব্যাপারেও চেয়ারম্যান চেষ্টা চালাচ্ছেন। আশা করি তা অল্প দিনের মধ্যেই বোঝা যাবে। তবে বন জঙ্গল কেটে দেওয়ার যে অভিযোগ উঠছে সেটা প্রশাসনের ক্ষতিয়ে দেখা উচিত'।

শান্তিপুরের মুসলমান সমাজের সদস্য আলী মন্ডলও বলেন, সমাজের সার্বিক উন্নয়নে আরও গুরুত্ব দেওয়া  দরকার সরকার এবং স্থানীয় শান্তিপুর পৌরসভার। কারণ ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী মৃত্যুর পর তার প্রকৃত এবং নিজস্ব জায়গা হচ্ছে কবরস্থান। যেটা অত্যন্ত পবিত্র। কিন্তু সেখানেও নানা অবিচার ব্যাভিচারে ভরে গেছে, যা নিয়ে উসমা প্রকাশ করে থাকেন সমাজের সকল স্তরের সংখ্যালঘু ধর্মালম্বী ব্যক্তিগণ। এদেরই সম্মিলিত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ এর আগে  নূন্যতম পরিষেবা গুলি দিয়ে, সমগ্র সমাজের ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত প্রয়োজন।