অমৃতবাজার এক্সক্লুসিভ, স্নেহা কুন্ডু - " বয়সের সাথে বুদ্ধি আসে। ভ্রমনের সাথে অভিজ্ঞতা আসে"- সান্দ্রা লেকের এই কথায় অনুপ্রানিত হয়েই হয়তো বাঙালিরা অভিজ্ঞতার জন্য বেরিয়ে পরে ভ্রমনের উদ্দেশ্যে। আপনাদের আমরা আগেও অযোধ্যার কিছু জায়গা যেমন সীতাকুন্ড ও বাঘমুন্ডি সম্পর্কে জানিয়েছিলাম এছাড়াও পুরুলিয়ায় অনেক স্পট আছে যা ৫ থেকে ৬ দিন শীতকালের ট্যুরের জন্য অন্যতম স্পট। শীতকালের পিকনিকের জন্য শাল, শিরিষ, মহুয়া, সেগুনে ছাওয়া সবুজ অরণ্যভূমি সহ ছোট-বড় পাহাড়ি ঝর্ণা দিয়ে ঘেরা এই লাল মাটির জেলা পুরুলিয়া কলকাতার কাছাকাছি একটি আদর্শ ছুটি কাটানোর জায়গা।
রোমাঞ্চপ্রেমী বাঙালিদের ট্রেকিংয়ের জন্যই অযোধ্যা পাহাড় বেশি পরিচিতি লাভ করছে দিনে দিনে।ছোটনাগপুর মালভূমির অন্তর্গত পুরুলিয়ার অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র হলো এই অযোধ্যা পাহাড়।গাড়ি ভাড়া করে আপনি পাহাড় অন্যান্য স্পট ঘুড়ে দেখতে পারবেন।এখানে বেশিরভাগ পর্যটক পিকনিক করতে আসে শীতকালের ছুটিতে। আপনারা গাড়ি করে চলে যেতে পারেন শাল, সেগুন, পলাশের বনের মধ্যে দিয়ে আঁকা বাঁকা পথে অযোধ্যা পাহাড়ের দিকে।যাওয়ার পথে চারপাশের প্রকৃতির সৌন্দর্য্য দৃশ্য দেখে আপনার মনে " পিন্দারে পলাশের বন পালাব পালাব মন..."এই গান বেজে উঠতে বাধ্য।
অযোধ্যা পাহাড়ের সীতা কুন্ড নিয়ে জনশ্রুতি আছে যে স্বয়ং শ্রীরামচন্দ্র এই পাহাড়ে এসেছিলেন। সেই সময় সীতার তৃষ্ণা পেলে শ্রীরামচন্দ্র তীর ছুঁড়ে পাহাড়ের বুক চিরে বের করেন জল। হিলটপের কাছে সেই জায়গাটি এখন সীতাকুন্ড নাম পরিচিত। মাটির ভেতর থেকে অবিরাম জলের ধারা এই কুন্ডয় এসে পরে।গরমকালে অন্যান্য জলাশয়ের জল শুকিয়ে গেলেও এই কুন্ডের জল কখনও শুকোয় না।
সুবর্ণরেখা নদীর উপরে আপার ড্যাম ও লোয়ার ড্যাম তৈরি আছে।এই ড্যামের উপর রাস্তায় দাড়িয়ে আপনারা ফটোশুট করতে পারেন।
অযোধ্যা পাহাড়ের কাছেই আছে ময়ূর পাহাড়।ময়ূর পাহাড়ের উপরে রয়েছে একটি হনুমান মন্দির। ময়ূর পাহাড়ের চূড়া থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের অসাধারন দৃশ্য আপনারা উপভোগ করতে পারবেন।
ড্যামে যাওয়ার রাস্তাতেই পরে মার্বেল লেক। আসলে এটি একটি পাথরের খাদান। চারপাশে ঘিরে থাকা উঁচু উঁচু পাথুরে টিলা ও তার মধ্যিখানে টলটলে জলের দৃশ্য বেশ সুন্দর এখানেও আপনারা ফটোশুট করতে পারেন এবং নিজেদের ভ্রমনের অভিজ্ঞতাকে ক্যামেরাবন্দী করতে পারবেন।
মার্বেল লেক থেকে একটু এগিয়েই দেখে নিতে পারেন বামনী ফলস। এই ফলসটি দেখতে গেলে পাহাড়ের বেশ কিছুটা নিচে নামতে হয়। অক্টবর-নভেম্বর মাসে এই ফলস এর দৃশ্য আপনাকে আরো মুগ্ধ করবে।
বাঘমুন্ডি শহর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের কোলে আছে চড়িদা গ্রাম। এই চড়িদা গ্রামে প্রায় একশো পরিবারের বাস। কয়েক প্রজন্ম ধরে যাঁরা একটাই কাজ করে থাকেন - ছৌ নাচের মুখোশ তৈরী করা। এখানে একের পর এক ছোট ছোট বাড়িতে সার দিয়ে সাজানো শুধুই রঙ বেরঙের মুখোশ। এখান থেকে আপনারা মুখোশ কিনে নিয়ে বাড়িতে ঘর সাজাতে পারবেন।
আপনাদের ভাগ্য ভালো থাকলে যেখানে পিকনিক স্পট সেখানে অনেকসময় ছৌ-নাচের দলের দেখা পেতে পারেন এবং তারা সবার কাছ থেকে টাকা তুলে আপনাদের সামনে ছৌ-নাচ প্রদর্শন করবে।যেটা আপনারা নিজেদের স্মৃতির অংশ বানাতে পারবেন।
কিভাবে যাবেন?
কলকাতার ধর্মতলা থেকে পুরুলিয়া পর্যন্ত সোজাসুজি বাস পেয়ে যাবেন।তাছাড়া ট্রেনের ব্যবস্থা আছে।পুরুলিয়া শহরে হোটেলের ভালো ব্যবস্থা আছে যেখানে আপনারা গিয়ে থাকতে পারবেন।