অমৃতবাজার এক্সক্লুসিভ, স্নেহা কুন্ডু - ১ দিনের ছুটিতে চড়ুইভাতি উপলক্ষ্যে ঘুড়ে আসতে পারেন হুগলি জেলার পাণ্ডুয়ার অবস্থিত ইটাচুনা রাজবাড়ি থেকে।স্থানীয়দের কাছে এই রাজবাড়ি বর্গীদের বাড়ি নামে পরিচিত। এই 'বর্গী বাড়ি ' নিয়ে জড়িয়ে আছে নানান ইতিহাস। এই জায়গার আরেক নাম বর্গীডাঙা। অনেক বাংলা ও হিন্দি ছবির শ্যুটিং হয়েছে এই রাজবাড়ীতেই। রণবীর সিং অভিনীত 'লুটেরা' ছবির শুটিং হয়েছিল এই রাজবাড়ীতে।
তাছাড়া এখানে অনেক ঐতিহাসিক বস্তু সংরক্ষিত আছে।
ইতিহাস - ৩০০ বছর আগে মারাঠা থেকে বর্গীদের দল বারবার আক্রমন করত আমাদের এই রাজ্যে। তাদেরই মধ্যে কিছু সংখ্যক বর্গী প্রচুর ধন সম্পদ অর্জন করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে এই স্থানে। তাদেরই মধ্যে একজন রাজা ছিলেন সাফল্য নারায়ন কুন্ডু। অনেকে মনে করেন মরাঠি ‘কুন্দন’ দের থেকেই এসেছিলেন ‘কুণ্ডু’রা। মারাঠী বংশ কুন্দাস বা কুন্দন। বাংলার জলবায়ুতে মিলমিশ হতে গিয়ে তারা ক্রমে হয়ে গেল কুণ্ডু। এই কুন্ডু পরিবারের বংশধর সাফল্য নারায়ন কুন্ডু ১৭৬৬ সালে ইটাচুনা রাজবাড়ি তৈরি করেছিলেন। প্রাসাদ তৈরির মূল উপাদান ইট ও চুন, তাই তার নামও হল ইটাচুনা রাজবাড়ি। আর বর্গীডাঙার নাম হোলো ইটাচুনা।স্থানীয়দের কাছে এটি বর্গীদের বাড়ি নামে পরিচিত। তাই এই জায়গার আরেক নাম বর্গীডাঙা। বিশাল আকার জায়গা জুড়ে অবস্থিত এই রাজবাড়ি বহু বছর ধরেই পরিত্যক্ত অবস্থাতেই পড়েছিল। কিছু বছর আগে এই রাজবাড়িটিকে আবার নতুন করে সাজিয়ে তোলেন এই বংশেরই ১৪ তম প্রজন্ম ধ্রুবনারায়ন কুণ্ডু। যিনি এই রাজবাড়ির বর্তমান মালিক। এরপর থেকে এই ইটাচুনা রাজবাড়ী সবার কাছে একটি আকর্ষণীয় পর্যটনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
রাজবাড়ির রূপ- বেশ কিছু সিনেমা ও অজস্র বিজ্ঞাপনী ছবির শুটিং হয়েছে । ইটাচুনার রাজবাড়ী এখন হুগলি জেলার পাণ্ডুয়া ব্লকের ইটাচুনা খন্যান গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ে।
খিলান - প্রবেশপথের দোতলায় জোড়া গোলাকৃতি থামের উপর ছোট ছোট দুটি কারুকার্য মন্ডিত সাদা খিলান, তার উপর বড় একটি খিলান আছে। সবটাই ফুল লতাপাতায় নকশা করা, তার উপরে এই রাজবাড়ীর প্রতিষ্ঠার কথা লেখা আছে - “১৭৬৬ সালে সাফল্য রায় কুণ্ডু মহাশয় কতৃক স্থাপিত”। সবার উপরে কুলদেবতার আশীর্বাদ প্রার্থনা “শ্রী শ্রী শ্রীধর জিউ কৃপাহিকেবলম”। তাছাড়া খিলানের মাথায় সমাজচিত্রর ছবি প্লাস্টারে ফুটিয়ে তোলা আছে। এবং অন্দরমহলে রয়েছে বড় বারান্দা,সিঁড়ি আর ছাদ যা দিয়ে অন্দরমহলের সব ঘরগুলিই সংযুক্ত।
ঐতিহ্যবাহী ইউ(U)’ আকৃতির রাজবাড়ি -
ইটাচুনার রাজবাড়ি সব দিক দিয়ে সাবেকী জমিদার বাড়ির স্বাদ এনে দেয়। বাড়িটি একটি উঠানকে ঘিরে নানা মহলে বিভক্ত । ঢুকেই বিশাল সবুজ চত্বর, তার পরের উঠানে রয়েছে নাটমন্দির, তারও পরে অন্দরমহল।
খিড়কি পুকুর -
একেবারে পেছনে আছে খিড়কি পুকুর। বিশাল খিড়কি পুকুরে মাছ রয়েছে , যা অতিথিরা ছিপ ফেলে ধরতে পারেন, কিন্তু মারবার নিয়ম নেই, ফের জলে ছেড়ে দেওয়াই নিয়ম।
তাছাড়া বাগানে রয়েছে রয়েছে ধানের গোলা ও ঢেঁকি।
বিভিন্ন অ্যান্টিক বস্তু যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঐতিহ্য -
ইটঁ আর চুন সুরকির তৈরী এই স্থাপত্য তার গরিমা প্রকাশ করে উচুঁ উচুঁ ধাপের সিঁড়ি, চারদিকে বিশাল চকমেলানো বারান্দা, প্রকাণ্ড আয়তনের ঘর, খড়খড়ির জানলা, প্রাচীন আসবাব, দেওয়ালে হরিণের শিং, কচ্ছপের খোলস দিয়ে তৈরী যুদ্ধের ঢাল, বারান্দার গোল থাম আর খিলানের ফাঁক দিয়ে আসা ঝিকিমিকি রোদ্দুরে।সাবেকিয়ানার ছাপ সর্বত্রই এই বাড়িতে বিরাজমান। তিনমহলা রাজবাড়ীর বহির্মহলে অফিস অর্থাৎ সেরেস্তার কাজকর্ম হতো। এক সময় এখানে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর অফিসও ছিল। প্রবেশপথের খিলানের উপর লেখা শ্রীমদভাগবতগীতার বাণী - “পিতা স্বর্গ, পিতা ধর্ম পিতাহি পরমং তপ,পিতরি প্রীতিমাপন্নে প্রিয়ন্তে সর্বদেবতা ”।
শিবের আশ্চর্য মূর্তি - কথিত আছে এই বংশের একজন বিহারে ইংরেজ আমলে ইংরেজ সরকারের অধীনে চাকরী করতেন। সেখানে উনি এই বিগ্রহটি পান এবং ইটাচুনায় প্রতিষ্ঠা করেন। এই শিবমূর্তিটি জটাধারী, গোঁফওয়ালা দেখলে মনে হয় কোন এক যোগী পুরুষ যেন বসে আছেন। এধরনের মূর্তি সাধারণত কোথাও দেখা যায় না।শোনা যায়, এই শিবের পুজো শুরু হবার পরেই কুণ্ডু বংশে কিছু দুর্ঘটনা ঘটে, ফলে তাঁরা আর এই মূর্তির পূজা করেন না, গ্রামবাসীরাই নিত্যপূজা চালান। মন্দিরের আকৃতিও একটু বিশেষ ধরনের। ভিতরের দিকে গোলাকৃতি। সামনে গথিক আর্চ দিয়ে তৈরী বারান্দা, মন্দির চূড়ায় বিভিন্ন খাঁজকাটা। সামনে প্রাঙ্গণে রয়েছে শিবের বাহন নন্দীর মুর্তি।
সুবিশাল দাবা বোর্ড- এখানে রয়েছে বিশাল দাবার বোর্ডও। তাছাড়া সাবেকী বৈঠকখানা আজও সজ্জিত রয়েছে পুরোনো অস্ত্র, ঝাড়বাতি, শ্বেতপাথরের টেবিল, গড়গড়া, টানা পাখার দ্বারা।
বর্তমান অবস্থা - রাজবাড়িকে সিনেমায় ব্যবহার করার জন্য পরিচালকরা বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করেন, রঙ করেন, যা এর ঐতিহ্য ও গঠনের পক্ষে ক্ষতিকারক হয়ে দাড়ায়। তাই বর্তমান বংশধর ধ্রুবনারায়ণ কুণ্ডু যাবতীয় ঐতিহ্য বজায় রেখেই এটিকে হেরিটেজ হোটেলে পরিণত করেছেন। বিভিন্ন ঘরের নামকরণও করেছেন পরিবারের যে যে ঘরে যে যে সদস্যরা থাকতেন সেই সব নাম দিয়ে। যেমন গিন্নিমা, বড়মা, বড়পিসি, বড় বউদি, জেঠামশাই, কাকাবাবু, বড়দি ইত্যাদি। চাইলে আপনারা এই বাড়িতে রাত্রি যাপন করতে পারবেন।
কি খাবেন ?
এখানকার খাবারের ব্যবস্থাও আপনাদের মন জয় করবেই।কারণ বিশাল খাবার টেবিলে কাসার থালায় একদম ঘরোয়া বাঙালি খাবারের পরিবেশনেও পাওয়া যায় রাজকীয় ছোঁয়া। এখানকার খাবারের স্বাদ আপনাদের বহু দিন পর্যন্ত মুখে লেগে থাকবে।
কিভাবে যাবেন ?
হাওড়া থেকে বর্ধমান মেন লাইনে ব্যান্ডেল ছাড়িয়ে আরও গোটাতিনেক স্টেশনের পর আসবে খন্যান। সেখনে নেমে রিকশা করে পৌঁছে যাবেন এই রাজবাড়ি।তাছাড়া কলকাতা থেকে গাড়ি নিয়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে দু’ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে যেতে পারেন ইটাচুনা রাজবাড়িতে।যান্ত্রিক জীবনযাত্রার মাঝে ১ দিনের সফরে আসতেই পারেন এই রাজবাড়িতে যেখানে আপনারা গ্রাম্য পরিবেশে পাবেন রাজকীয় ছোঁয়া।
ভারত - ১০১/৪ (১৯.৫)
নিউজিল্যান্ড - ৯৯/৮ (২০)
ইতিমধ্যেই তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ
বিটিং দ্য রিট্রিটের অনুষ্ঠানে ছিল একাধিক চমক
ভারত - ৬৯/৩ (১৪)
ইংল্যান্ড - ৬৮ (১৭.১)
কিছুমানুষ দলকে কালিমালিপ্ত করার জন্য সর্বদাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে , দাবি তৃণমূলের
ম্যাচের শেষে ফলাফল ৬-৩, ৭-৬ (৭-৪), ৭-৬ (৭-৫)
তৃণমূলের পতাকা ছেড়ার অভিযোগ আইএসএফের বিরুদ্ধে
দুজনের অবস্থা অতি আশঙ্কাজনক , ইতিমধ্যেই বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বন বিভাগ
গ্রেফতার ১ দুষ্কৃতী
আপনাদের আশীর্বাদে আমি এমপি হয়ে আসলে অবশ্যই এখানকার উন্নতির চেষ্টা করব , আশ্বাস হিরো আলমের
একদিনে ১০০ সেতু , ১০০ সড়ক কোনো সরকার করতে পেরেছে , দেশবাসীর কাছে দাবি হাসিনার
ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সহ ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ
বেঙ্গাইজোতের এশিয়ান হাইওয়ে-২তে মুখোমুখি সংঘর্ষ দুটি গাড়ির , আহত ৫
যখন কোনো দলীয় কর্মসূচিতে যাই, তখন কারোর ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট দেখতে পাই না , দাবি সায়নীর
আবাস যোজনায় দুর্নীতি , দলীয় অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পরলেন তৃণমূল কর্মীরা