নিজস্ব প্রতিনিধি, কাবুল - আফগানিস্তান তালিবান হস্তক্ষেপ করার পর দেশের মানুষের স্বাধীতা, তাদের অধিকারে দখলদারী করতে শুরু করে তারা। বিশেষ করে নারীদের ওপর অত্যাচারের সীমা অতিক্রম করে যায়। তাদের পড়াশোনা এবং চাকরির ওপর কোপ পরে। তালিবদের নির্দেশ অমান্য করে তাদের রক্তচক্ষুর সামনে পড়তে চাননি অধিকাংশ নারীরা। তবে সেই দেশেরই বাসিন্দা বেহিস্তা খইরুদ্দিন একটি নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করলো।

২০২১ সালের ১৫ অগস্ট কাবুল দখল করেছিল তালিবান। তারপরই মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে তারা, বেহিস্তা তখন মাদ্রাজ আইআইটির পড়ুয়া। তালিবান সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে পড়াশোনা চালু রাখতে গোপনে বাড়ির মধ্যেই তিনি তৈরি করে ফেলেন একটি পরীক্ষাগার। সেখানেই নিরন্তর গবেষণার কাজ চালিয়ে যায় সে। তালিবান সরকারের কাছে নত হয়নি সে। অবশেষে সাফল্য ধরা দিল তার কাছে। ভারতের কুলীন এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হয়েছেন তিনি।

তার এই লড়াই কোনও দিনই সহজ ছিল না। ২৬ বছরের এই সাহসী তরুণী ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে দূরশিক্ষণেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাঠ নিচ্ছিল। কিন্তু তালিবরা ক্ষমতা দখল করার পরেই আফগানিস্তানের সঙ্গে যাবতীয় কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে নয়াদিল্লি। মাদ্রাজ আইআইটির নিয়মিত ছাত্রীদের তালিকা থেকেও বাদ যায় সেই তরুণীর নাম। এই গম্ভীর অবস্থায় আইআইটির এক অধ্যাপককে ফোন করে সাহায্য চায় বেহিস্তা। সেই অধ্যাপকের সাহায্যেই আবার পড়াশোনা শুরু করতে পারে সেই তরুণী।

অবশেষে সব প্রতিকূলতা জয় করে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে শংসাপত্র হাতে পেয়েছেন তিনি। আফগানিস্তান থেকেই জানিয়েছেন, দুর্বল ইন্টারনেট, লোডশেডিংয়ের সঙ্গে লড়ে পড়াশোনা করতে হয়েছে তাঁকে। ভবিষ্যতে গবেষণায় আসতে চাওয়া বেহিস্তা জানান, পরিবারের সাহায্য ছাড়া তিনি এত দূর আসতে পারতেন না। তালিবানের উদ্দেশে বেহিস্তা খইরুদ্দিন জানায়, 'যদি তুমি আমায় আটকানোর চেষ্টা করো, তবে আমি বিকল্প পথ ঠিকই খুঁজে নেব'। এই বার্তায় হাজার হাজার বেহিস্তারা অনুপ্রেরণা পান, প্রতিবাদের ঝড় তাদের মধ্যে বয়ে যায়।