অমৃতবাজার এক্সক্লুসিভ, স্নেহা কুন্ডু - ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ধুপগুড়ি ব্লকের তিস্তা নদীর তীরে পুরনো শালবাড়িতে অবস্থিত ভ্রামরী দেবী মন্দিরটি নদীর তিন স্রোতের মাঝে অবস্থান করছে বলে একে ত্রিস্রোতা বলা হয়। হিন্দুদের তীর্থক্ষেত্র হিসাবে এই শক্তিপীঠ খুবই জাগ্রত। চাইলে আপনারা ঘুরে আসতে পারেন এই মহাপীঠ থেকে।
ইতিহাস - সত্য যুগে দক্ষ যজ্ঞে সতী শিব নিন্দা সহ্য করতে না পেরে নিজের আত্মাহুতি দেন। এরপর মহাদেব কালভৈরবকে পাঠান সতীর পিতা দক্ষকে বধ করতে। তারপর সতীর দেহ কাঁধে তুলে নিয়ে তিনি শুরু করেন তান্ডবনৃত্য । এই সময়ে সমগ্র সৃষ্টি ধ্বংসের সম্মুখীন হলে বিষ্ণু সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর দেহ ৫১ টি ভাগে খন্ডিত করেন। এই অংশ গুলো যেখানে পরেছে সেখানে মন্দির তৈরি হয়েছে এবং এগুলোকে সতীপীঠ বা শক্তিপীঠ বলা হয়। এই স্থানে দেবী সতীর দেহের অংশগুলো প্রস্তররূপে সংরক্ষিত আছে।
ভ্রামরী দেবী মন্দিরে দেবী সতীর বাম চরণ পড়েছিল। এখানে দেবীর নাম ভ্রামরী, এবং ভৈরবের নাম ঈশ্বর বা জল্পেশ।
দেবীর নাম ভ্রামরী কেন হলো ?
পুরাণ অনুসারে, অরুণাসুর নামে এক অসুর ব্রহ্মার থেকে বরদান পেয়েছিল যে কোনো দ্বিপদী বা চতুষ্পদী প্রাণী তাকে হত্যা করতে পারবে না,বরে মত্ব হয়ে সে কৈলাসে দেবী পার্বতীকে যখন আক্রমণ করেছিল তখন দেবী ভ্রামরী রূপ ধরে যুদ্ধে অগ্রগমণ করেন এবং দেবী ভ্রামরী শতসহস্র ভ্রমরকে পাঠালে যুদ্ধাঙ্গনে তারা অরুণাসুরকে দংশন করে ও তাকে সম্পূর্ণ ভক্ষণ করে, ফলে তার মৃত্যু হয়। এই কারণে দেবীর নাম ভ্রামরী হয়।
মন্দিরের প্রতিষ্ঠা কিভাবে হয়েছিল?
মন্দিরটি তৈরির সঠিক তারিখ এখনও অজানা । কারণ এটি এমন এক শক্তিপীঠ যা বহু শতাব্দী আগে তৈরি হয়েছিল। মন্দির চত্বরে জোরা বট গাছ আছে যা এখানকার খুবই আকর্ষণীয় এক বিষয় বস্তু। এই সতীপীঠ খুবই জাগ্রত। তাছাড়া শোনা যায়, আজ থেকে প্রায় চল্লিশ বছর আগে এক লাল কাপড় পরা মহারাজ এসেছিলেন এই মন্দিরে । তার মাথা থেকে পা পর্যন্ত বিশাল জটা ছিল। তিনি দীর্ঘদিন এই মন্দিরে পূজা ও যজ্ঞ করেন। তিনিই তিনটি মোটা গাছের গুড়ির নিচে মায়ের পাথররুপী বাম পার সন্ধান পান । এরপর দেশ বিদেশ থেকে মন্দিরে সাধুসন্তরা আসতে শুরু করে । সে সময় এখানে আসা ভক্তদের কেউ একজন মন্দিরের একটা ম্যাপ এঁকেছিল। যা আজও ফালাকাটা স্টেশনের দেওয়ালে দেখা যায়।
একবার জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার দুই অফিসার এই মন্দিরে এসেছিলেন । তারাই শালবাড়ির লোকেদের কাছে মায়ের মহিমার কথা বলেছিলেন। এই এলাকার এক প্রবীণ নিরেন রায় একটি দুর্ঘটনায় নির্দোষ হওয়া সত্বেও মামলায় জড়িয়ে গেছিলেন। তখন মা ভ্রামরী দেবীর কৃপায় তিনি সেই মামলা থেকে মুক্তি পান । তিনিই মুক্তি পাওয়ার পর মায়ের নতুন প্রতিমা তৈরি করে পূজা করে ও জোড়া পাঠা বলি দিয়েছিলেন।
মন্দিরটির অভ্যন্তরীণ অবস্থা ও দেবীর মূর্তি - মূল মন্দিরের প্রবেশ পথে সিদ্ধিদাতা গণেশের মূর্তি আছে। মূলমন্দিরে দেবীমূর্তি রয়েছে সেখানে দেবী অলঙ্কারে ভূষিত ও অষ্টভূজা । দেবীর সামনে বড় বড় কলস আছে। কলসের উপরে পুষ্পপত্র আছে । এর পাশে আছে পিতলের দেবী চরণযুগল। যা ভক্তিভরে পূজা করা হয়। দেবীর ডানদিকে মহাদেবের মূর্তি আছে । এই কক্ষের নীচেই কয়েক সিঁড়ি পরে মন্দিরের গর্ভগৃহ। দেবী সেখানে সিংহবাহনী ও কৃষ্ণবর্না এবং সামনের বেদীতে রয়েছে দেবীর প্রস্তরীভূত বামপদ রয়েছে।মায়ের মন্দিরটি বৈকুণ্ঠপুর অরন্য অঞ্চলের অধীন শাল,সেগুন প্রভৃতি বৃক্ষবেষ্টিত এক মনোরম পরিবেশের মধ্যে অবস্থিত এবং এই স্থানকে তন্ত্রসাধনার এক উত্তম ক্ষেত্র হিসাবে গণ্য করা হয়।
মন্দির দর্শনের ভালো সময় - শরত্কালে নবরাত্রির পূজা হয় এই মন্দিরে। তাছাড়া মন্দিরে দূর্গা পূজা ও মাঘী পূর্নিমায় বিশেষ পূজা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয় ।চাইলে আপনারা এই সময়কেও ভ্রমনের জন্য বেছে নিতে পারেন।
কিভাবে যাবেন?
জলপাইগুড়ি শহরের গোশালা মোড় থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে গেলেই শিকারপুরে দেবী চৌধুরানী মন্দিরকে ডানে রেখে বাঁদিকের রাস্তা ধরে সোজা এগোলেই একটু বাঁদিকের বাঁকে পড়বে ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগান ও বোদাগঞ্জ সেখানে তিস্তানদীর পাশ ধরে এই মায়াবী ভ্রামরী দেবী মন্দিরটির অবস্থান দেখা যাবে।
রেলপথ - হাওড়া রেলস্টেশন ও শিয়ালদা রেলস্টেশন দুটি স্টেশনই ভারতের সমস্ত নগর,শহরের সঙ্গে যুক্ত। সেখান থেকেই আপনারা ট্রেন ধরে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন ও তারপর সড়ক পথে বাস ও অন্যান্য যানবাহনে মন্দির প্রাঙ্গণে আসতে পারবেন।
বিমান পথ - নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কলকাতা এবং সেখান থেকে বাগডোগরা বিমান বন্দরে নেমে আপনারা এরপর সড়ক পথ দিয়ে মন্দিরে পৌঁছে যাবেন।
সড়কপথ - ভরতবর্ষের যেকোন স্থান থেকে সড়কপথ হয়ে মন্দির পর্যন্ত আসা যায়। আপনারা জলপাইগুড়ি থেকে মায়ের মন্দিরে আসলে আপনাদের মাত্র ১৮ কিলো মিটার পথ অতিক্রম করতে হবে।
ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নিলেন বিজেপি বিধায়ক
ধৃতরা হল মনিরুল খান ও আব্দুল মজিদ খান
জাতীয় সড়কে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আহত ২০ জন যাত্রী
নির্মাতাদের এমন দৃশ্য কখনই সিনেমায় রাখা উচিত নয় , যা মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করে, দাবী আদিত্যনাথের
নবান্ন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি , নতুন এসপি হিসেবে দায়িত্ব নেবেন ভাস্কর মুখোপাধ্যায়
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসার আগের দিনই ইস্তেহার প্রকাশ তৃণমূলের
দোর্দণ্ডপ্রতাপ কেষ্ট জেলে , ক্রমেই বিরোধীরা থাবা বসাচ্ছে বীরভূমে
তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে জেরে চলছে বোমা-গুলি , ভাঙচুর করা হয়েছে একাধিক বাড়ি
WBCS পরীক্ষার প্রস্তুতিতে আজ ভারতীয় সংবিধান ও অর্থনীতি ও সাধারণ জ্ঞান ও সাম্প্রতিক ঘটনাবলী এবং সাধারণ বিজ্ঞানের উত্তরপত্র
বেফাঁস মন্তব্যের জেরে এবার ফের নতুন করে আইনি নোটিস পেলেন সৌমিত্র
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা বিবেচনা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে , বার্তা হাসিনার
রাশিয়া ও ইউক্রেনে চলমান সংঘাত বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব পরেছে , দাবি হাসিনার
ANM & GNM পরীক্ষার প্রস্তুতিতে আজ ভূগোল সাধারণ বিজ্ঞান ও General Intelligence & Reasoning এর উত্তরপত্র
একইমঞ্চে বিজেপি থেকেও সিপিএমে যোগ একাধিক কর্মীর
আগামী ৯ই ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টেস্ট ম্যাচ